Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

কৃষিবিপ্লব ও খাদ্য নিরাপত্তা অর্জনে তথ্য প্রযুক্তিনির্ভর কৃষি

মো. সজীব আল মারুফ

ভারত উপমহাদেশের অসহযোগ আন্দোলনের পথিকৃৎ মহাত্মা গান্ধী বলেছিলেন, ‘একজন ক্ষুধার্ত ব্যক্তি এক টুকরো রুটির মধ্যে ¯্রষ্টাকে দেখেন’। বঙ্গবন্ধু এই ঐতিহাসিক বাণী উপলব্ধি করে বলেছিলেন, “খাবার অভাব হলে মানুষের মাথা ঠিক থাকে না। সে জন্য খাওয়ার দিকে নজর দেওয়ার প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। আমাদের চেষ্টা করতে হবে অন্নহীন মানুষের মুখে অন্ন তুলে দিতে”। পাকিস্তান কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু প্রত্যাগমন করেন ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি। ১৯৭২ সালের ১৮ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু প্রথম আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে যে বিষয়টি দৃঢ়ভাবে তুলে ধরেন তাহলো: ‘অর্থনীতিকে অবশ্যই পুনর্গঠন করতে হবে। খাদ্য, আশ্রয় ও বস্ত্র অবশ্যই দিতে হবে মানুষকে’ (বাঙালির মহামানব, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব, মো. ফজলুল হক, ২০১৮)। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘এই স্বাধীনতা আমার কাছে সেদিনই প্রকৃত স্বাধীনতা হয়ে উঠবে, যেদিন বাংলাদেশের কৃষক, মজুর ও দুঃখী মানুষের সকল দুঃখের অবসান হবে। আমাদের এমন একটি সমাজ গড়ে তুলতে হবে, যে সমাজে এই কৃষকরা, এই শ্রমিকরা, এই ক্ষুধার্ত জনগণ আবার হাসতে পারবে। জনগণের প্রাণ ধারণের অন্যতম চাহিদা পূরণের নিশ্চয়তা বিধান করা না গেলে স্বাধীনতা অর্থহীন হয়ে পড়বে। কাজেই সংগ্রাম এখনও শেষ হয়নি, মূলত সংগ্রাম মাত্র শুরু হয়েছে। এবারের সংগ্রাম সোনার বাংলা গড়ে তোলার সংগ্রাম। বাংলাদেশের এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি রাখা হবে না’ (বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের অর্থনীতি, মো. শাহাদাৎ হোসেন, ২০১০)।
স্বাধীনতার পর জনগণের মুখে অন্ন তুলে দেওয়া ছিল কঠিন কাজ। সে সময় হালের বলদই ছিল চাষাবাদের প্রধান হাতিয়ার। কিন্তু যুদ্ধের সময় অধিকাংশ কৃষক ঘর ছাড়া। যুদ্ধ শেষে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই হালের বলদ আর পাওয়া যায়নি। ফলে কৃষক জমি চাষ করতে পারছিলেন না। এমন পরিস্থিতিতে দরিদ্র কৃষকদের মধ্যে এক লাখ হালের বলদ বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। ৫০ হাজার গাভীও বিতরণ করা হয়। একই সঙ্গে সে সময়েই উদ্যোগ নেওয়া হয় বিজ্ঞানভিত্তিক কৃষি ব্যবস্থা। বঙ্গবন্ধু বিশ্বাস করতেন মান্ধাতার আমলের কৃষি দিয়ে বাংলার মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাবে না। কৃষিকে হতে হবে আধুনিক।   কৃষি হতে হবে তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর। বাংলার কৃষক ও        কৃষিবিদ সমাজ ক্ষুধামুক্ত সোনার বাংলা গড়ার সঠিক দিকনির্দেশনা পায় কিন্তু ১৯৭৫ এর ১৫ই আগস্ট থেমে যায় একটি দীর্ঘ স্বপ্নের যাত্রাপথ। বঙ্গবন্ধু কতিপয় স্বার্থান্ধ, উচ্চাভিলাষী বিপথগামী সেনা সদস্যের হাতে সপরিবারে নিহত হন। সেই সাথে মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে পৌঁছায় তথ্য প্রযুক্তিনির্ভর কৃষির স্বপ্ন।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম স্বপ্ন দেখেছিলেন, ‘বিশ্ব জগত দেখবো আমি আপন হাতের মুঠোয় পুরে’। ইন্টারনেট প্রযুক্তির মাধ্যমে সে স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়েছে। মোবাইল ও কম্পিউটারে ইন্টারনেট সংযুক্তি সারা পৃথিবীকে হাতের নাগালের মধ্যে নিয়ে আসা সম্ভব হয়েছে । দেশে ৯৭% লোক মোবাইল ব্যবহার করে। কৃষি তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারে উৎপাদন বাড়ে এটি নিশ্চিত একটি বিষয়। বঙ্গবন্ধু তনয়া শেখ হাসিনার হাত ধরে বঙ্গবন্ধুর আধুনিক তথা প্রযুক্তিনির্ভর কৃষির দিকে এগিয়ে চলছে আমাদের কৃষি।
আগের দিনে কৃষকেরা অভিজ্ঞতার ওপর নির্ভর করতেন।      কৃষি সম্পর্কিত প্রয়োজনীয় তথ্যের অভাবে বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে হতো। কৃষকেরা তাঁদের ফসল, হাঁস-মুরগির খামার ও মৎস্যসম্পদের বিভিন্ন রোগবিষয়ক তথ্য সময়মতো না পাওয়ায় ক্ষতির সম্মুখীন হতেন। এসব রোগের দ্রæত সমাধান সব সময় পাওয়া যেত না। কিন্তু এখন কৃষিক্ষেত্রে দেশ অনেক এগিয়েছে। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি করা সম্ভব হচ্ছে। মুঠোফোন, কম্পিউটার ও বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার কৃষির উৎপাদন বৃদ্ধিতে ভ‚মিকা রাখছে। কৃষিতে তথ্য প্রযুক্তি নতুন সম্ভাবনা নিয়ে এসেছে। বিশ্বের সঙ্গে তালমিলিয়ে দিনদিন দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এগিয়ে যাচ্ছে অর্থনীতির চাকা। আর এই এগিয়ে যাওয়ার সঙ্গে দেশের অন্যান্য খাতের মতো কৃষির অবদানও অনেক। বঙ্গবন্ধু কৃষিতে যে বিপ্লবের ডাক দিয়েছিলেন সেই কৃষির নতুন দিগন্তের দ্বার উন্মোচন হয়েছে। আর এই বিপ্লবের পেছনে কৃষি-সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সাধারণ      কৃষক যেমন জড়িত, তেমনি প্রযুক্তির অবদান রয়েছে ব্যাপক। এক গবেষণায় দেখা গেছে, দেশের ৮৪ শতাংশ কৃষক মুঠোফোন ব্যবহার করেন। তাদের অধিকাংশই এখন কৃষি তথ্য পেতে সহায়তা নিচ্ছেন তথ্য প্রযুক্তির। কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, বর্তমান সরকারের সুপ্রসারিত কৃষিনীতিতে রয়েছে আর্থসামাজিক উন্নয়ন, বিশ্বায়নের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাণিজ্যিক কৃষি উন্নয়ন, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং উন্নয়নসহ      কৃষির আধুনিকীকরণ, নতুন প্রযুক্তির উদ্ভাবন ও স¤প্রসারণে গবেষণা সুবিধা বৃদ্ধিসহ নানা পদক্ষেপ গ্রহণ। অন্যদিকে প্রতি বছর কৃষি জমি কমতে থাকা, জনসংখ্যা বৃদ্ধিসহ জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বন্যা, খরা, লবণাক্ততা ও বৈরী প্রকৃতিতেও খাদ্যশস্য উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে উদাহরণ। ধান, গম ও ভুট্টাবিশ্বের গড় উৎপাদনকে পেছনে ফেলে ক্রমেই এগিয়ে চলছে বাংলাদেশ।
বর্তমান সরকারের প্রচেষ্টায় ডিজিটালাইজেশন ঘটছে আমাদের কৃষিতে। ডিজিটাল কৃষিতথা ই-কৃষি প্রবর্তনের ধারা জোরদার করা হয়েছে। কৃষিকল সেন্টারে ১৬১২৩ নম্বর এ যে কোন অপারেটরের মোবাইল ফোন থেকে প্রতি মিনিটে ২৫ পয়সা হারে কল করে কৃষকরা কৃষি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ বিষয়ে যে কোন সমস্যার তাৎক্ষণিক বিশেষজ্ঞ পরামর্শ পাচ্ছেন । গ্রাম পর্যায়ে স্থাপিত কৃষি তথ্য ও যোগাযোগ কেন্দ্র (এআইসিসি) এর মাধ্যমে কৃষকেরা নিজেরাই নিজেদের মাঝে তথ্য সেবা গ্রহণ ও বিতরণের কাজটি করছেন। এসব কেন্দ্রে প্রশিক্ষণসহ যাবতীয় আইসিটি উপকরণ (কম্পিউটার, ল্যাপটপ, প্রিন্টার, মডেম, ক্যামেরা ইত্যাদি) সরবরাহ করা হয়েছে। কৃষি তথ্য সার্ভিস থেকে কৃষি পরামর্শ গ্রহীতাদের অনলাইনে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে বিশেষজ্ঞ পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। এর ফলে প্রান্তিক জনগণের মাঝে তথ্য প্রাপ্তির সুযোগ বৃদ্ধি হয়েছে। বর্তমানে দেশব্যাপী ৪৯৯টি কেন্দ্রতাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। সমীক্ষায় দেখা গেছে প্রতিটি এআইসিসি থেকে দৈনিক ২২-২৫ জন মানুষ তথ্য সেবা পেয়ে উপকৃত হচ্ছেন। বাংলাদেশের প্রতিটি উপজেলায় স্থাপন করা হয়েছে টাচ স্ক্রিন কিওস্ক। কৃষিবিষয়ক বিভিন্ন তথ্য, অডিও ভিডিও কনটেন্ট ইত্যাদি খুব সহজেই ব্যবহারের একটি অনন্য মাধ্যম হলো টাচ স্ক্রিন কিয়স্ক। হাতের স্পর্শে প্রতিযোগিতা ছাড়াই একজন ব্যবহারকারী খুব সহজেই তার কাক্সিক্ষত তথ্যটি এই কিয়স্ক থেকে পেতে পারেন। কিয়স্কের ভেতর কৃষি তথ্য সার্ভিস কর্তৃক নির্মিত বিভিন্ন ই-বুক, ভিডিওসামগ্রী, অডিওসামগ্রী, এআইসিসি ডাটাবেইজ ইত্যাদি সন্নিবেশিত করা হয়েছে। তাছাড়া এসব কিয়স্কে উচ্চগতির ইন্টারনেট সংযোগও প্রদান করা হয়েছে। আগ্রহী কৃষক বা যেকোন ব্যবহারকারী তাঁর প্রয়োজনীয় কৃষি তথ্য এখান থেকে নিতে পারছেন।
কৃষক, স¤প্রসারণকর্মীসহ সংশ্লি­ষ্ট সবার বছরব্যাপী আইসিটিভিত্তিক প্রশিক্ষণের জন্য কৃষি তথ্য সার্ভিস দশটি আধুনিক আইসিটিল্যাব স্থাপন করা হয়েছে। প্রতিটি ল্যাবে ২৫টি ডেস্কটপ কম্পিউটার, মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর, ইন্টারনেট সংযোগসহ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষ প্রশিক্ষণার্থীদের আইসিটি বিষয়ক প্রশিক্ষণের জন্য আদর্শ ভেন্যু হিসেবে বিবেচিত। এসব ল্যাবে শুধু কৃষি তথ্য সার্ভিসের বিভিন্ন প্রশিক্ষণই নয়, কৃষি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও যথাযথ অনুমোদন সাপেক্ষে প্রশিক্ষণ কাজে ব্যবহার করতে পারেন। ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে আইসিটিভিত্তিক নিরবচ্ছিন্ন প্রশিক্ষণ, কর্মশালার মাধ্যমে দক্ষ মানবসম্পদ গঠনে এসব ল্যাব কার্যকর ভ‚মিকা রেখে চলেছে।
কৃষকের দোরগোড়ায় ডিজিটাল সেবা পৌঁছে দেওয়া এবং দেশব্যাপী ই-কৃষি সেবা স¤প্রসারণের লক্ষ্যে সম্প্রতি ডিজিটাল প্লাটফর্ম ‘কৃষিবাতায়ন’ এবং ‘কৃষকবন্ধু’ ফোন সেবা চালু হয়েছে। ‘কৃষি বাতায়ন’ ব্যবহারের মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ে কৃষি স¤প্রসারণ কর্মীর সঙ্গে কৃষকের সার্বক্ষণিক যোগাযোগ, কৃষি গবেষণার সঙ্গে মাঠ পর্যায়ের সংযোগ সাধন, কৃষি তথ্যভিত্তিক জ্ঞানভাÐার গড়ে তোলা এবং মাঠপর্যায় থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত বিবিধ রিপোর্ট আদান-প্রদান সহজ হচ্ছে। এ বাতায়নের সহায়ক মোবাইল অ্যাপ্লি­কেশন ‘কৃষকবন্ধু ফোন সেবা’র মাধ্যমে ৩৩৩১ নম্বরে ফোন করে কৃষক নিকটস্থ উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার সঙ্গে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংযোগ স্থাপন এবং অতি সহজে প্রয়োজনীয় কৃষি সেবা পাচ্ছেন।
সম্প্রতি বৈশ্বিক করোনা পরিস্থিতিতে কৃষি মন্ত্রণালয় দেশের খাদ্যশস্য ও কৃষিপণ্যের সঠিক বিপণন, ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতকরণ, চাহিদা মোতাবেক সহজলভ্যতা তৈরি এবং জরুরি অবস্থায় ফুড সাপ্লাইচেইন অব্যাহত রাখতে বাংলাদেশের প্রথম উন্মুক্ত কৃষি মার্কেটপ্লেস ফুড ফর ন্যাশন (িি.িভড়ড়ফ ভড়ৎহধঃরড়হ. মড়া.নফ) চালু করা হয়েছে। এই মার্কেটপ্লেসটি সম্পূর্ণ ফ্রি প্ল্যাটফর্ম, এর ব্যবহার করে ক্রয়-বিক্রয় বা বিজ্ঞাপন দেয়া যাবে বিনামূল্যে।
জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় কৃষিমন্ত্রীর যুগোপোযোগী পরিকল্পনা, পরিশ্রমী কৃষক এবং মেধাবী কৃষিবিদের যৌথ প্রয়াসেই এ সাফল্য। য়
কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার, দৌলতপুর, কুষ্টিয়া, মোবাইল : ০১৭২৩২৬৯৮৭৩, ই-মেইল : sagibmaruf@gmail.com


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon